সখীপুর, টাঙ্গাইল,সংবাদদাতা :
গতকাল রোববার সকালে হঠাৎ করেই বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে আগুন লেগে পুড়ে যায়, অসহায় দিনমজুর রাজিয়া আক্তারের একমাত্র দোচালা ঘরটি। ঘর থেকে কোনো মালামালও বের করা যায়নি। মাথা গোজার শেষ সম্বলটুকু পুড়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পরেন রাজিয়া।
রাজিয়ার ঘর পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হলে, রোববার সন্ধ্যায় রাজিয়ার পুড়ে যাওয়া ঘরটি পরিদর্শন করেন ইউএনও আসমাউল হুসনা।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে একটি নতুন ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি তাঁকে দুই সপ্তাহের খাদ্যসহায়তা ও এক হাজার টাকা দেন। ইউএনওর ‘মমতার দাওয়াই’ পেয়ে থেমে যায় রাজিয়ার কান্না। মুখে ফুটে ওঠে হাসি।
উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজিয়ার স্বামী আবদুল বারেক সাত বছর ধরে তাঁর স্ত্রীর খোঁজখবর নেন না।
বারেক গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন এবং সেখানে আরেকটি বিয়ে করেছেন। দুই ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে রাজিয়া দিনমজুরি করে সংসার চালান। করোনাভাইরাসের কারণে দুই মাস ধরে তাঁর কাজ বন্ধ থাকায় এমনিতেই ভীষণ কষ্টে ছিলেন।
রাজিয়া আক্তার বলেন, ‘বিহান থেকে আমি শুধু কান্তাছি। আমার ঘরে যা আছাল সব পুইড়া ছাই অইয়া গেছে। ম্যাডাম নতুন পাহা ঘর দিব বইলা এহন ভালা লাগতাছে। চাইল, আলু, ডাইলও দিয়া গেছে। মাসে মাসে আরও চাইলও পামু।’
ইউএনও আসমাউল হুসনা বলেন, ‘ঘর পোড়ার খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ওই বাড়িতে যাই। মাথা গোঁজার একমাত্র ঘরটি পুড়ে যাওয়ায় ওই নারী সকাল থেকে শুধু কাঁদছেন আর কাঁদছেন। তাঁকে একটি পাকা ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, দুই সপ্তাহের খাবার, নগদ এক হাজার টাকা দিয়ে এসেছি। এ ছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা প্রকল্পের আওতায় এখন থেকে প্রতি মাসে ওই নারী ২০ কেজি করে চাল পাবেন।
কাপড়চোপড় সব আগুনে পুড়ে যাওয়ায় সোমবার ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন কাপড় কেনার ব্যবস্থা করে এসেছি।’
কাঁকড়াজান ইউপির চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ইউএনও মহোদয়ের ভেতরে মানবিকতা ও মমত্ববোধ রয়েছে। এই করোনাকালে তিনি আরও পাঁচ নারীর আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।’
গত ২৫ এপ্রিল প্রথম আলোর অনলাইনে ‘ইউএনও দিলেন মমতার দাওয়াই’ শিরোনামে সংবাদ প্রচারিত হয়। তখন থেকে সখীপুরের ইউএনও আসমাউল হুসনা মমতার দাওয়াই বলে পরিচিতি পান।
Leave a Reply